উৎসবের বিশাল বারি, শুল্ক সংস্কৃতির ঐতিহ্য এবং ফাল্গুন নিয়ে বাংলাদেশের দ্বীপের মাছ বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান উৎসব। সারা বছর ধরে এদেশে নানা ধরনের উৎসব অনুষ্ঠিত হয় ফাল্গুন মাসের প্রথম দিনে। ফাল্গুন মাসের প্রথম দিনটি দেশে বসন্ত ঋতুর প্রথম দিন হিসেবেও পরিচিত এবং এ কারণে। ফাল্গুনীর আরও কিছু নাম আছে যেমন পহেলা ফাল্গুন বসন্ত বসন্ত উৎসব ইত্যাদি। ফাল্গুনী হল বাংলা ক্যালেন্ডারের ১১ তম মাস এবং বসন্ত ঋতুর প্রথম মাস যখন সমগ্র জাতি এই পহেলা ফাল্গুন উৎসব উদযাপন করে। অনেকেই রয়েছেন যারা পহেলা ফাল্গুন নিয়ে অনলাইনে উক্তি অনুসন্ধান করেন। তাই আজকের এই পোস্টে জানাবো পহেলা ফাল্গুন নিয়ে কিছু উক্তি।
বাংলার ষড়ঋতু পরিক্রময় বসন্তকে বলা হয় ঋতুরাজ। ফাল্গুন এবং চৈত্র মাস মিলে বসন্ত কাল। বসন্তের প্রথম দিনকেই ফাল্গুন মাস হিসেবে পরিচিতি দেওয়া হয়। শীতকালের তীব্র ঠান্ডা আর জীর্ণতার অন্ধকার কে গুছিয়ে নবীন আলোর প্রভাত নিয়ে আসে এই ফাল্গুন মাস। পহেলা ফাল্গুন বাঙালি সংস্কৃতির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিন। এই দিনটিকে মানুষ পহেলা ফাল্গুন হিসেবে উদযাপন করে কেননা এই দিনটিতেই শুরু হয়ে যায় গরমের দিন আর চলে যায় তীব্র ঠান্ডার শীতকাল। গরমের দিনকে নবীন করে নেওয়ার জন্যই পহেলা ফাল্গুন উৎসব পালন করা হয়। এ দিনটিতে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের অনুষ্ঠান করা হয়। আবার কোন কোন জায়গায় পহেলা ফাল্গুন এর মেলা বসে। বসন্তকালকে বরণ করে নেওয়ার জন্যই এই উৎসবটি পালন করা হয়।
পহেলা ফাল্গুন নিয়ে উক্তি
- ফাল্গুনে শুরু হয় গুনগুনানী, ভোমরাটা গায় গান ঘুম ভাঙানি। – ফররুখ আহমেদ
- সূর্য-ঘড়ি সাত সকালে, ফাগুন রাঙ্গা শাড়ি পড়ে দিন গোনে আজ কার? বাসন্তিরা সবুজ টিপে, লাল সাদা আর হলুদ পাড়ে হাত ধরেছে তার। – সংগৃহীত
- স্পন্দিত নদীজল ঝিলিমিলি করে , জ্যোৎস্নার ঝিকিমিকি বালুকার চরে । নৌকা ডাঙায় বাঁধা , কাণ্ডারী জাগে , পূর্ণিমারাত্রির মত্ততা লাগে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- খেয়াঘাটে ওঠে গান অশ্বথতলে , পান্থ বাজায়ে বাঁশি আন্মনে চলে । ধায় সে বংশীরব বহুদূর গাঁয় , জনহীন প্রান্তর পার হয়ে যায়। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- দূরে কোন্ শয্যায় একা কোন্ ছেলে বংশীর ধ্বনি শুনে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- বিহুরে লগন মধুরে লগন, অকাশে বাতাসে লাগিল রে চম্পা ফুটিছে চামলী ফুটিছে, তার সুবাসে ময়না আমার ভাসিল রে। – সংগৃহীত
- আজি এ বসন্ত দিনে বাসন্তী রঙ ছুয়েছে মনে; মনে পরে তোমাকে ক্ষণে ক্ষণে চুপি চুপি নিঃশব্দে সঙ্গোপনে। – সংগৃহীত
- হলুদ বরন মেঘলা এ তার যৌবন উছলায় লাল ওরনার আড়াল দিয়া চক্ষু দুটি চায় খোপায় টগর ময়না বুঝি আমায় খুঁজে হায় বসন্তে এ বিহুর লগন উত্তাল হয়ি যায়। – সংগৃহীত
- বিহুরে লগন মধুরে লগন, অকাশে বাতাসে লাগিল রে নাচিতে নাচিতে তার ভরা যৌবন বিহুর সাজে সবার মাঝে অসিল রে। – সংগৃহীত
- তাহার নাচ দেখি অমার অঙ্গ অবস হয় ঢোলের কাঠি দুহাত থিকে অপনি খসি যায় জগত জুড়ি বিহুর পরব খুসি জে ছড়ায় বসন্তে এ বিহুর লগন উত্তাল হয়ি যায়। – সংগৃহীত
- আমাকে পাবে না খুঁজে, কেঁদে কেটে মামুলি ফাল্গুনে। – হেলাল হাফিজ
- হয়তো ফুটেনি ফুল রবীন্দ্রসঙ্গীতে যত আছে, হয়তো গাহেনি পাখি অন্তর উদাস করা সুরে বনের কুসুমগুলি ঘিরে। আকাশে মেলিয়া আঁখি তবুও ফুটেছে জবা, দূরন্ত শিমুল গাছে গাছে, তার তলে ভালোবেসে বসে আছে বসন্ত পথিক। – নির্মলেন্দু গুণ
- একঝাক পাখি এসে ঐকতানে , গান গায় এক সাথে ভোর বিহনে, অচানক দুনিয়াটা আজব লাগে, আড়মোড়া দিয়ে সব গাছেরা জাগে, লাল নয় কালো নয় সবুজ পাতা, জেগে ওঠে একরাশ সবুজ পাতা। – ফররুখ আহমেদ
- বসন্ত এলো এলো এলোরে পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহুরে মুহু মুহু কুহু কুহু তানে মাধবী নিকুঞ্জে পুঞ্জে পুঞ্জে ভ্রমর গুঞ্জে গুঞ্জে গুনগুন গানে। – কাজী নজরুল ইসলাম
- মনের আকাশে ঐ ফাগুন; পিয়াসী পাখি উড়ে যায় সুদূরেতে, কার যেছায়া মাখি! – সংগৃহীত
- ফাগুনের রঙে রেঙেছো তুমি, না বলা কথা আজ বলবো আমিঃ হৃদয়ের ডাক শুনবে কি তুমি? – সংগৃহীত
- ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত। – সুভাষ মুখোপাধ্যায়
- হে কবি! নীরব কেন-ফাল্গুন যে এসেছে ধরায়, বসন্তে বরিয়া তুমি লবে না কি তব বন্দনায়? – সুফিয়া কামাল
- কহিল সে স্নিগ্ধ আঁখি তুলি- দখিন দুয়ার গেছে খুলি? বাতাবী নেবুর ফুল ফুটেছে কি? ফুটেছে কি আমের মুকুল? দখিনা সমীর তার গন্ধে গন্ধে হয়েছে কি অধীর আকুল? – সুফিয়া কামাল
- এখনো দেখনি তুমি?” কহিলাম “কেন কবি আজ এমন উন্মনা তুমি? কোথা তব নব পুষ্পসাজ? – সুফিয়া কামাল
- তরী তার এসেছে কি? বেজেছে কি আগমনী গান? ডেকেছে কি সে আমারে? -শুনি নাই,রাখিনি সন্ধান। – সুফিয়া কামাল
- কহিলাম “ওগো কবি, রচিয়া লহ না আজও গীতি, বসন্ত-বন্দনা তব কণ্ঠে শুনি-এ মোর মিনতি।” কহিল সে মৃদু মধুস্বরে- “নাই হ’ল, না হোক এবারে- আমার গাহিতে গান! বসন্তরে আনিতে ধরিয়া- রহেনি,সে ভুলেনি তো, এসেছে তো ফাল্গুন স্মরিয়া। – সুফিয়া কামাল
- কহিলাম “ওগো কবি, অভিমান করেছ কি তাই? যদিও এসেছে তবু তুমি তারে করিলে বৃথাই।” কহিল সে পরম হেলায়- “বৃথা কেন? ফাগুন বেলায় ফুল কি ফোটে নি শাখে? পুষ্পারতি লভে নি কি ঋতুর রাজন? মাধবী কুঁড়ির বুকে গন্ধ নাহি? করে নি সে অর্ঘ্য বিরচন? – সুফিয়া কামাল
- ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দানঃ তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দানঃ আমার আপনহারা প্রাণ; আমার বাঁধন ছেঁড়া প্রাণ। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- ফাগুনের নবীন আনন্দে গানখানি গাঁথিলাম ছন্দে; দিল তারে বনবীথি কোকিলের কলগীতি, ভরি দিল বকুলের গন্ধে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল , ডালে ডালে পুঞ্জিত আম্রমুকুল । চঞ্চল মৌমাছি গুঞ্জরি গায় , বেণুবনে মর্মরে দক্ষিণবায়। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর