শবে কদর কবে ২০২২

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় দ্বীনি ভাইয়েরা। লায়লাতুল কদর কবে এটা জানার আগে জানা দরকার লাইলাতুল কদর আমাদের মুসলমানদের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ।আমরা সবাই অবগত আছি লাইলাতুল কদর বা শবে কদর এমন একটি রজনী যা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন লাইলাতুল কদরি খইরুম মিন আলফিসা।লাইলাতুল কদর বা শবে কদর হচ্ছে হাজার মাসের চেয়েও দামি একটি রজনী। শবে কদর  হবে ২০২২ রমজান মাসের ২১ তম রোজা থেকে বেজোড়ের দিনের মধ্যেই শবে কদরের রাত।

শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের এই রাতে কোন ব্যক্তি যদি আমল করে তাহলে তার আগের সব গুনাহ গুলো মাফ হয়ে যাবে। শবে কদর এমন একটি রাত যে রাতে আল্লাহ তাআলা আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে থাকে। এটি এমন একটি  এই রাতে মুসলমানদের বেশী বেশী আমল করতে হবে।এখন প্রশ্ন হল লাইলাতুল বা শবে কদর কবে বা কোন রাতে।আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্টভাবে বলে যাননি যে এইদিন শবে কদরের রাত।

শবে কদর কবে 

শবে কদর এমন একটি রাত যেটি হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠতম রাত মুসলমানদের জন্য। এই রাতের যে কোন আমলই হাজার মাসের রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ আমল। সেজন্য আল্লাহতায়ালা এ রাত্রিকে লাইলাতুল কদর আখ্যায়িত করেছেন। আমাদের জানা দরকার শবে কদর কবে। শবে কদর শেষ দশ রোজার বেজোড় রাতগুলোতে  হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শবে কদর সম্পর্কে সর্বাধিক বিশুদ্ধ ও বিতর্ক মুক্ত অভিমত এটি। 

  • শবে কদর কোন রাতে হবে এটা সঠিক জানা নেই কারো। কিন্তু আমি এটা জানি যে রমজান মাসের শেষ ১০ রোজার যেকোনো রাতে শবে কদরের রাত পাওয়া যায়।
  •  এই রমজান মাসের শেষ ১০ রোজার মধ্যে একটি রাত আমাদের এবাদত ছাড়া উচিত নয়। কারণ মহানবী সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা শেষ ১০ রোজার যেকোনো একটি রাত হবে শবে কদর।
  • আমাদের শেষ ১০ রোজার মধ্যে আমল বেশি বেশি করতে হবে যদি আমরা তাও না পারি অন্তত ২৭ তম রোজার মধ্যে আমরা যেন সারারাত আমল করতে পারি।

শবে কদরের আমল

শবে কদর বা লাইলাতুল কদরের ফজিলত ও আমল গুলো জানা এবং পালন করা মুসলমানদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই রাত উপলক্ষে মুসলমানদের করণীয় কি। লাইলাতুল কদর শব্দের অর্থ বলে দিচ্ছে এই রাতটি মুসলমানদের জন্য কত গুরুত্বপূর্ণ।। কদর শব্দের অর্থ  হলো মর্যাদা।হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ এটি রাত হলো লাইলাতুল কদর। কেউ কেউ এড়াতে শবে কদর হিসেবেও জানে। এই রাতের যেকোনো অনলি হাজার মাসের আমলের থেকে শ্রেষ্ঠ।

  • আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম শবে কদরের রাতে ইবাদত বন্দেগী ও নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে ব্যক্তি ঈমান এর সঙ্গে নেকির আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে রাত জাগবে তার সব আগের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
  •  এক হাদীসে আছে আয়েশা (রা)রাসুল আল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেন এই আল্লাহর রাসূল আমি যদি জানতে পারি লাইলাতুল কদর কোনটি তাহলে আমি সেই রাতে কি বলবো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন তুমি বলো হে আল্লাহ নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু আপনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
  •  রমজানের শেষ দশকের প্রতিটি বেজোড় রাতে ইবাদতে মগ্ন থাকা উত্তম। তাহলে আর শবে কদর ছুটে যাওয়ার সংখ্যা থাকে না। এ ব্যাপারে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেনঃ তোমরা রমজানের শেষ দশকের রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করো।

শবে কদরের দোয়া

শবে কদরের রাত কবে হবে এটা সঠিক ভাবে উল্লেখ করা হয়নি।হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম হে আল্লাহর রাসূল। আপনি বলে দিন দিনঃ আমি লায়লা তাহলে কোন দোয়া পড়বো।

  • তখন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন। তুমি বলো হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাশীল এবং ক্ষমা করতে ভালোবাসেন অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন।
  • হে আমাদের পালনকর্তা আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। অতএব তুমি আমাদের ক্ষমা করো এবং রহম করো। তুমি তো দয়ালুর মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।
  •  হে আমাদের রব। নিশ্চয়ই আমরা ঈমান এনেছি সুতরাং তুমি আমাদের গোনাহ ক্ষমা করে দাও এবং আমাদের জাহান্নামের আজাব থেকে রক্ষা করো।
  • আল্লাহ তাআলা ক্ষমা পেতে কোরআনুল কারিমে তিনি বান্দার জন্য অনেক দোয়া তুলে ধরেছেন। নামাজের সেজদা তাশাহুদ সহ সব ইবাদত-বন্দেগিতে পড়া যেতে পারে।

শেষ কথা

আল্লাহ তায়ালা আমাদের  মুসলিম উম্মাহকে লাইলাতুল কদর পাওয়ার তৌফিক দান করুক। মুমিন মুসলমানদের উচিত সেজদায় গিয়ে তাজবি পড়া কিংবা শেষ বৈঠকে তাশাহুদ ও দুরুদ পড়ার পর নিজেদের গুনা থেকে মুক্তির জন্য কুরআন বর্ণিত দোয়া গুলো বেশি বেশি পড়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। লাইলাতুল কদর হিসেবে অনেক দোয়া রইল সেগুলো নিয়মিত পড়া। এবং কোরআনে উল্লেখিত দোয়ার মাধ্যমে জীবনের গুনাহ থেকে মুক্ত হওয়ার তৌফিক দান করুক।